NSRIC

NSRIC Time
(EST-Toronto Time)

EST-Toronto Time

Hassle-free and genuine immigration and visa services for peace of mind


Local Time

Local Time Counter

Any qualified individual planning to become a permanent resident (PR) in Canada may apply for a Canadian Experience Class (CEC) visa through the NSRIC immigration and visa consulting (NIVC). The CEC is a specific immigration stream designed for individuals who have gained valuable Canadian work experience and wish to transition from temporary residency to permanent residency
Authorized by and registered with the Ministry of Public and Business Service Delivery, Toronto, Ontario, Canada.
Registration Number: BIN 1000692434/OCN 3258546

Few Words on Canadian Schooling visa (কানাডায় স্কুলিং ভিসা নিয়ে কিছু কথা)

হ্যালো, বন্ধুরা! আজকের রচনাতে আমরা আলোচনা করব কানাডায় স্কুলিং ভিসা নিয়ে। কানাডায় পড়াশোনার সুযোগের জন্য কীভাবে আপনার সন্তানকে পাঠাতে পারেন, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন। যদি আপনার সন্তান কানাডায় পড়তে যেতে চান এবং আপনি জানেন না কোথা থেকে শুরু করবেন, তাহলে এই লেখা আপনার জন্যই।

কানাডায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে লাখো শিক্ষার্থী পড়তে আসে। ২০১৯ সালে কানাডায় পড়তে এসেছে প্রায় সাড়ে ছয় লাখের ওপরে। এই শিক্ষার্থীরা কানাডার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। এর পাশাপাশি অনেকে পড়াশোনা করে কানাডায় স্থায়ীভাবে থেকে যায়। বেশ কয়েক বছর ধরে কানাডা তাদের ইউনিভার্সিটি ও কলেজগুলোর পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সুযোগ করে দিচ্ছে। এই সুযোগের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারো শিশু কানাডায় আসছে। যারা আসছে, তারা সবাই অর্থনৈতিকভাবে ধনীর সন্তান। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এই প্রোগ্রামে আপনার সন্তানকে পাঠাতে চান, তাঁরা শুরুতেই মনে রাখবেন, দেশে যদি অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়ে না থাকেন, তাহলে আপনার সন্তানকে এ প্রোগ্রামে পাঠাতে পারবেন না।

কানাডার স্কুলের শিক্ষাব্যবস্থা
কানাডার স্কুলগুলোর শিক্ষার মান অনেক উন্নত। এখানে অনেক প্রভিন্সে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা হয় না। স্কুলের পর বাসায় গিয়ে পড়াশোনার কোনো চাপ নেই। অন্তত গ্রেড সেভেন স্কুলে কোনো বই নিয়ে যেতে হয় না। স্কুলগুলোতে বিশাল জিম, লাইব্রেরি, বাইরে ট্যুর, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার ব্যাবস্থা রয়েছে। স্কুলগুলোতে পড়াশোনার পাশাপাশি মিউজিক, থিয়েটার, আর্ট, রান্না, ইলেকট্রিক ও কাঠের কাজ, কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রোগ্রাম, ড্রাইভিং ইত্যাদি শিখানো হয়। ১২ ক্লাসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে একটি শিশু সবকিছু শিখে বের হয়।

কীভাবে শুরু করবেন
কানাডার সরকারি ইমিগ্রেশনের ওয়েবসাইট www.cic.gc.ca এ গিয়ে ‘Studying in Canada as a minor’ লিখে সার্চ দিলে সব তথ্য পেয়ে যাবেন। কানাডার স্কুলগুলো প্রভিন্সিয়াল সরকারের অধীনে। প্রতিটি প্রভিন্সে আলাদা আলাদা স্কুল ডিভিশন রয়েছে। আপনি যে প্রভিন্সে আপনার সন্তানকে পাঠাতে চান, সেখানে যোগাযোগ করবেন। সেই স্কুল ডিভিশন থেকে অফার লেটার পেলে সন্তানের ভিসার জন্য আবেদন করবেন। কানাডার ১০টি প্রভিন্স ও ৩টি টেরিটরিতে মাইনরের বয়সের পার্থক্য রয়েছে। কিছু জায়গায় ১৮ বছর কিছু জায়গায় ১৯ বছর।

আপনার সন্তান যেহেতু ১৮ বা ১৯ বছরের নিচে, সেই কারণে তাকে একা পাঠাতে পারবেন না। আপনার সন্তান প্রথমে এক বছরের ভিসা পাবে। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিসা নবায়ন করতে হবে। আপনি বা আপনার স্পাউস যেকোনো একজনকে শিশুর সঙ্গে আসতে হবে। চাইলে দুজনও আসতে পারেন। যিনি সঙ্গে আসবেন, তিনি ভিজিট ভিসায় আসবেন। সে কারণে আপনাদের আলাদাভাবে কানাডার ভিজিট ভিসা নিতে হবে। এ ভিসার মেয়াদ পাঁচ বছরের হতে পারে। এ ভিসায় যিনি আসবেন, তিনি একনাগাড়ে ছয় মাসের বেশি কানাডায় থাকতে পারবেন না। ছয় মাস থেকে বাংলাদেশে ফিরে আবার পুনরায় কানাডায় আসতে হবে।


কানাডায় যেহেতু আপনি বা আপনার স্পাউস সব সময় কানাডায় থাকবেন না, সে কারণে কানাডায় একজনকে কাস্টোডিয়ান লাগবে। তাঁকে কানাডার নাগরিক বা কানাডার পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি হতে হবে। তিনি যে এলাকায় থাকবেন, আপনার সন্তানকে ওই প্রভিন্সের এবং তাঁর বাসার কাছের স্কুলে পড়াতে হবে। অর্থাৎ তিনি যদি অন্টারিও প্রভিন্সে থাকেন, তাহলে ওখানেই পড়াতে হবে। কাস্টোডিয়ান খোঁজার ক্ষেত্রে নিজের আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবকে প্রাধান্য দেবেন। তা খুঁজে না পেলে কানাডায় অনেকে টাকার বিনিময়ে কাস্টোডিয়ান হন। তাঁদের খুঁজে নিতে হবে। সন্তানের পিতা–মাতা যদি কাছে না থাকেন, সন্তান শিশু হওয়ার কারণে তাকে অবশ্যই ওই কাস্টোডিয়ানের বাসায় থাকতে হবে। ওই কাস্টোডিয়ান যেহেতু সম্পূর্ণ অফিশিয়ালভাবে আপনার সন্তানের দায়িত্ব নেবেন, সে কারণে সন্তানের সব দায়িত্ব তাঁর। অর্থাৎ তিনি কানাডার আইন অনুসারে আপনার সন্তানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য। কাস্টোডিয়ান যেহেতু আপনার সন্তানের সব দায়িত্ব নিবেন, অর্থাৎ থাকা–খাওয়াসহ স্কুলের সবকিছু দেখাশোনা করবেন তিনি, সে কারণে তাঁকে পে করতে হবে।

খরচ কেমন হতে পারে
কানাডায় নাগরিক বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্টদের সন্তানদের ১২ ক্লাস পর্যন্ত পড়াশোনা সম্পূর্ণ ফ্রি। কিন্তু যারা কানাডার বাইরে থেকে পড়তে আসে, তাদের নিজেদের খরচ নিজেদের বহন করতে হয়। প্রভিন্সভেদে অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য মাসে প্রায় এক হাজার কানাডিয়ান ডলার টিউশন ফি লাগতে পারে। যিনি কাস্টোডিয়ান হবেন, তিনি যেহেতু তার থাকা–খাওয়াসহ সবকিছুর দায়িত্ব নেবেন, তাঁকে আপনার কমপক্ষে মাসে ১ হাজার ৫০০ কানাডিয়ান ডলার দিতে হতে পারে। তা ছাড়া চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে প্রায় ২০০ কানাডিয়ান ডলার ইস্যুরেন্স কিনতে হবে। আর অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ আছে। আর আপনি বা আপনার স্পাউস যদি সন্তানের সঙ্গে সব সময় থাকতে চান, তাহলে স্কুলের খরচ ছাড়া প্রতি মাসে প্রায় তিন হাজার কানাডিয়ান ডলার লাগবে থাকা–খাওয়া ও অন্যান্য খরচ বাবদ।

ভিজিট ভিসা ও অন্যান্য ভিসা বিষয়ক বিভ্রান্তি
কানাডায় আপনার শিশু যদি পড়াশোনা করতে যায়, তাহলে আপনি বা আপনার সহধর্মী একটি Visitor Visa (ভিজিট ভিসা) নিয়ে কানাডায় যেতে পারেন। তবে, এই ভিজিট ভিসার মাধ্যমে আপনি কানাডায় চাকরি করতে পারবেন না বা পড়াশোনা করতে পারবেন না। চাকরি বা পড়াশোনার জন্য আলাদা ভিসার প্রয়োজন হয়, যেমন ওয়ার্ক পারমিট বা স্টাডি পারমিট।

বিজ্ঞাপনের প্রতি সতর্কতা
কিছু কনসালটেন্ট বাবা-মায়েদের আকৃষ্ট করতে “স্কুলিং ভিসা” নামের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে থাকেন, যা আসলে ভ্রান্ত ধারণার জন্ম দেয়। তারা জানান যে, এই ভিসা দিয়ে সহজেই কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করা সম্ভব, কিন্তু আসলে তেমন কিছু নয়। বাবা-মা যদি কানাডায় একসাথে যাবার ইচ্ছা রাখেন, তাহলে তাদের একজনে টেম্পরারি ভিসা (যেমন ভিজিট ভিসা) পাবার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু এটা দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের অনুমতি দেয় না।

পিতা-মাতা কি কানাডায় এসে কাজ করতে পারবেন
অনেকেই ভাবেন এটা নিয়ে। আপনি আপনার সন্তানের সঙ্গে ভিজিট ভিসায় যেহেতু আসবেন, সে কারণে আপনি কোনোভাবেই কাজ করার অনুমতি পাবেন না। যদি কেউ ভেবে থাকেন, কানাডায় সন্তানের সঙ্গে এসে আপনি কাজ বা ব্যবসা করে টাকা আয় করবেন, তা কিন্তু সম্ভব হবে না।

সন্তান কীভাবে কানাডার নাগরিক হবে
আপনার সন্তান কানাডায় এসে পড়াশোনা করার পর ওয়ার্ক পারমিট এমনিতেই পাবেন। তা ছাড়া ১৮ বছর হলে তিনি ছাত্রাবস্থায় পার্টটাইম জব করতে পারবেন। পড়াশোনা শেষ করে ( কমপক্ষে ১২ ক্লাস ) ৬ মাস ফুলটাইম জব করার পর পার্মানেন্ট রেসিডেন্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিন বছরের মধ্যে কানাডিয়ান নাগরিক হয়ে যাবেন।

‘স্কুলিং ভিসা’য় আপনি নিজেও কি কানাডায় যেতে পারেন?
কানাডায় পড়াশোনার ব্যাপারে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশের নাগরিকদের ব্যাপক আগ্রহ নতুন কিছু নয়। এর অনেক কারণের একটি হলো, কানাডার পড়াশোনা থাকলে সেদেশে পরবর্তীতে অভিবাসী হতে সুবিধা হয়। আজকাল বিদেশি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চাদের পড়াশোনা করতে যাবার সুযোগও কানাডা সরকার দিয়েছে। স্বভাবতই আমাদের বাংলাদেশে অনেক অভিভাবক, যারা আর্থিকভাবে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছল, তারা কানাডায় তাদের স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের কানাডায় পড়াশোনা করতে পাঠানোর উপায় খুঁজতে থাকেন। আর বাবা-মায়ের এ আগ্রহের সুযোগ নেয় কনসালটেন্ট নামের একশ্রেণির প্রতারক।

মাঝেমাঝেই ‘কানাডায় স্কুলিং ভিসা’ নামের আড়ালে অনেক প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন দেখা যায়। অনেকে এ ধরনের বিজ্ঞাপন আমার নজরেও আনেন। কেউ কেউ আবার আবদার করে আমার কাছে দাবিও তোলেন, ‘স্যার, কানাডার রেজিস্টার্ড ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট (আরসিআইসি) হিসেবে প্রতারণামূলক ইমিগ্রেশন বিজ্ঞাপন বিষয়ে দেশের মানুষকে সচেতন করতে আপনার কিছু বলা উচিত।’ মূলত সে প্রসঙ্গেই আজ দু-চারটে কথা বলতে চাইছি।

আমার ফেইসবুকের ইনবক্সে পাওয়া একটি রংচঙা বিজ্ঞাপনের ভাষা দেখলাম এরকম: ‘স্কুলিং ভিসায় কানাডা গমনের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। যোগাযোগ: …।’ যিনি বিজ্ঞাপনটি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি একটি প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন সাথে, ‘দয়া করে জানাবেন, এই বিজ্ঞাপনের কথাগুলো কি সঠিক?’ আমি তাকে কোনও উত্তর দেইনি; কারণ, এ প্রশ্নের উত্তর অনেক দীর্ঘ।

এবার ওই বিজ্ঞাপনের ভাষাটা একটু বিশ্লেষণ করি। প্রথমত,, কানাডা ইমিগ্রেশনে ‘স্কুলিং ভিসা’ নামের আলাদা কোনও ভিসা নেই। ‘স্কুলিং ভিসা’ শব্দগুলো সম্ভবত বাঙালির উর্বর মস্তিষ্কের আবিষ্কার। এটা আসলে ‘স্টাডি পারমিট ফর মাইনর চিলড্রেন’ নামেই কানাডায় পরিচিত। আমার ধারণা, বিশেষ উদ্দেশ্য মাথায় রেখে কেউ কেউ বাংলাদেশে এটাকে ‘স্কুলিং ভিসা’ নাম দিয়েছে। বিজ্ঞাপনটির ভাষা দেখে মনে হতে পারে, কানাডা গমনের জন্য এটি একটি বিশেষ ধরনের ভিসা যাতে বাবা-মা চাইলে সহজে কানাডয় যেতে পারেন। আসলে ব্যাপারটি তেমন কিছু নয়।

বিশেষ কিছু শর্ত পূরণে সক্ষম হলে আপনি অবশ্যই আপনার শিশু সন্তান কানাডায় পড়াতে পাঠাতে পারেন। এতে কোনও সমস্যা নেই; অনেকে পাঠাচ্ছেনও। সমস্যার সৃষ্টি তখনই, যখন কেউ মনে করেন বাচ্চা পড়ছে অজুহাতে তিনিও বাচ্চার পিছু পিছু কানাডা গমন করে ধীরে ধীরে কানাডার স্থায়ী অভিবাসী হয়ে যেতে পারবেন।

তাহলে বিজ্ঞাপনদাতারা বাবা-মাকেও কানাডা গমনের লোভ দেখাচ্ছেন কোন যুক্তিতে? এক অর্থে তারা কিন্তু মিথ্যে বলছেন না। কারণ, বাবা-মা বা তাদের যেকোনও একজন টেম্পরারি বা অস্থায়ী ভিসা (ভিজিট ভিসা) নিয়ে কানাডা যেতে পারেন। ‘ভিজিট ভিসা’ আবেদনের কারণ হিসেবে দেখানো যেতে পারে বাচ্চার সাথে থেকে তার দেখভাল করা। তবে, এ কাজে বাবা-মা দুইজন প্রয়োজন নেই বলে ভিসা অফিসার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুজনের একজনকে ভিজিট ভিসা দিয়ে থাকতে পারেন; ভিসা দিতেই হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা ভিসা অফিসারের নেই যদিও। দুৰ্ভাগ্যবশত, দুজনের কেউই ভিসা না পেলে কানাডায় আপনার বাচ্চার থাকা-খাওয়া ও দেখভালের বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থার উদ্যোগ কিন্তু আপনাকেই নিতে হবে।

ধরলাম, বাচ্চার সাথে কানাডা যাওয়ার জন্য পিতামাতার একজন ভিজিট ভিসা পেলেন। তারমানে কিন্তু এ নয় যে আপনি কানাডা গিয়ে সুযোগমতো চাকরি করে ফাঁকতালে কিছু আয় উপার্জনও করে ফেলবেন! করলে সেটা হবে অবৈধ। ভিজিট ভিসা নিয়ে আপনি কোনভাবেই কানাডায় চাকরিবাকরি বা পড়াশোনা করতে পারেন না। পড়াশোনা করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই আলাদাভাবে স্টাডি পারমিটের আবেদন করতে হবে। বা, কাজ করতে গেলে আবেদন করতে হবে ওয়ার্ক পারমিটের। ভিজিটর ভিসা নিয়ে কানাডায় এসব ব্যবস্থা করা, বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া, বেশ কঠিনই বটে। তাই, সত্যিকার অর্থেই যদি আপনার নাবালক সন্তানকে কানাডায় পড়াশোনা করাতে চান তাহলে আপনাকে সন্তানের এবং (ভিসা পেলে) আপনার নিজের খরচপাতি চালানোর ব্যবস্থা চূড়ান্ত করেই সে কাজে হাত দেওয়া উচিত।

এ পর্যায়ে আপনার মাথায় হয়তো প্রশ্ন জাগছে, এ কাজে খরচ কেমন লাগতে পারে? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়; তবে কমবেশি মাসিক কানাডিয়ান দুই হাজার পাঁচশ ডলার, যা বাংলা টাকায় কমবেশি এক লাখ ষাট হাজার টাকা, খরচ হতে পারে বলে আমার ধারণা, যা বছরে আনুমানিক বিশ লাখ টাকা ধরা যায়। এতে বাচ্চার টিউশন ফি-সহ আনুষঙ্গিক খরচাদি এবং বাবা-মায়ের একজনের থাকা-খাওয়ার খরচ বিবেচনায় রেখেছি। দেশে আসা যাওয়ার খরচ কিন্তু আলাদা। আবারো বলছি, বাচ্চা কানাডা আসছে বলেই আপনাকে ‘ভিজিট ভিসা’ দিতে হবে বলে ভিসা অফিসারের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। ভিসা না পেলে কানাডায় বাচ্চার দেখাশোনার বিকল্প ব্যবস্থা আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে।

এবার বুঝুন উপরের বিজ্ঞাপনের ভাষা কতোখানি সত্য বা মিথ্যা। তবে আমি বলবো, যেহেতু বিজ্ঞাপনের ভাষা হতে মানুষ সার্বিক বিষয়ে একটা ভুল ধারণা পাবার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। তাই, এ ভাষা না সত্য, না পুরোপুরি মিথ্যা; বলা চলে, সত্যের অপলাপ। অর্থাৎ, মহাভারত’-এর অন্যতম প্রধান চরিত্র যুধিষ্ঠিরের সেই ‘সত্য’ ভাষণের মতোই অর্ধ সত্য: ‘অশ্বত্থামা হত, ইতি গজ।’ দ্রোণ ভাবতেন, যুধিষ্ঠির কখনো মিথ্যে বলেন না, তাই, তার কথা বিশ্বাস করে শেষতক নিজের প্রাণ খুইয়েছিলেন দ্রোণ।

যাক, যারা বাচ্চাদের পড়ানোর উদ্দেশ্যে কানাডা পাঠানোর কথা সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছেন তাদের জন্য কিছু কথা বলে আজকের পর্ব শেষ করবো। আপনাদের কেউ একজন বাচ্চার সাথে ভিজিট ভিসা নিয়ে কানাডা আসার সুযোগ পেলে কানাডার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ইমিগ্রেশন পরামর্শকদের সাথে যোগাযোগ করে জেনে নিতে পারেন কিভাবে কানাডায় আপনি নিজেও ধীরে ধীরে স্থায়ী বসবাসের পরিবেশ বা সুযোগ তৈরি করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো, কানাডায় কিভাবে কোন স্টাডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যায় তা নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া যেতে পারে। যদি দেখা যায়, আপনার উপযোগী কোনও স্টাডি প্রোগ্রাম পেয়ে গেছেন যা ভবিষ্যতে আপনাকে কানাডায় ইমিগ্রেশন পেতে সহায়তা করবে, তাহলে আপনি সে স্টাডি প্রোগ্রামে ভর্তির উদ্যোগ নিতে পারেন। এটা অসম্ভব বা দোষের কিছু নয়।

এক্ষেত্রে আপনাকে একটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। তা হলো, আপনি যে বিষয়ে পড়াশোনা করতে চাইছেন, বা যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চাইছেন তা পরবর্তীতে আপনাকে কানাডা ইমিগ্রেশনের বিষয়ে কতটা হেল্প করবে। যেকোনও প্রতিষ্ঠানের যেকোনও স্টাডি প্রোগ্রাম শেষ করে কিন্তু কানাডা ইমিগ্রেশনের আবেদন করা যায় না। আপনি স্টাডি পারমিট নিয়ে কানাডায় পড়াশোনা শুরু করতে পারলে আপনার সন্তান কিন্তু টিউশন ফি ছাড়াই কানাডায় পড়াশোনা করতে পারবে। তারমানে, আপনার খরচ নেমে আসবে প্রায় অর্ধেকে।

নিয়ম কানুন মেনে ধীরেসুস্থে আগালে সন্তানের পড়াশোনার পাশাপাশি কানাডায় সেটেল হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু, বাঁকা পথে কিছু করতে গেলে, যেমন, রাতের আঁধারে চোরাগোপ্তা কিছু কাজ করে ক্যাশ ডলার কামানোর মতো বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়লে আপনার এবং একই সাথে, আপনার সন্তানের কানাডা-ভবিষ্যত গভীর অন্ধকারে নিপতিত হতে পারে। তেমন ভুল যেন না করেন।

যাক, এ লেখা আর দীর্ঘায়িত না করি। কানাডায় পড়াশোনা, বা ইমিগ্রেশন বিষয়ে কোনও বিশেষ প্রশ্ন থাকলে আমাকে নিচের ইমেইল ঠিকানায় জানাতে পারেন। পরের কোনও লেখায় আপনার আগ্রহের প্রতিফলন ঘটানোর প্রয়াস থাকবে।

শেষ কথা
আসা-যাওয়ার খরচ বাদে, প্রতি মাসে ৩ হাজার ৫০০ কানাডিয়ান ডলারের ওপরে খরচ করার সক্ষমতা না থাকলে, সন্তান পাঠানোর কথা চিন্তা করবেন না। কানাডায় কাজ করে আপনার সন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top